আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় পটুয়াখালী জেলার সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল,পটুয়াখালী জেলা বাংলাদেশের ৮টি বিভাগের মধ্যে বরিশাল বিভাগের অন্তর্গত ।
পটুয়াখালী জেলা সর্ম্পকে কিছু তথ্যঃ-
পটুয়াখালী জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল ও বাংলাদেশের একটি উপকূলীয় জেলা। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত পটুয়াখালী বরিশাল বিভাগের একটি সম্ভাবনাময় জেলা। পর্যটন নগরী কুয়াকাটা এ জেলার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ। এখানে রয়েছে একসাথে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার অপরূপ দৃশ্য যা বিশ্বে বিরল। তাই পর্যটকদের কাছে পটুয়াখালী “সাগরকন্যা” নামে পরিচিত। উপজেলা সংখ্যানুসারে পটুয়াখালী বাংলাদেশের একটি “এ” শ্রেণীভুক্ত জেলা। মেঘনা নদীর অববাহিকায় পললভূমি এবং কিছু চরাঞ্চল নিয়ে এই জেলা গঠিত।
পটুয়াখালী জেলা শহর একটি পূর্নাঙ্গ প্রশাসনিক অঞ্চল। এই জেলায় বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজসহ আছে প্রচুর সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠা। স্বাধীন বাংলাদেশে সর্বপ্রথম পটুয়াখালী মহুকুমাকে একটি জেলায় উন্নীত করা হয়। দেশের সর্ববৃহৎ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রা বন্দর, দ্বিতীয় সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা, দক্ষিণাঞ্চলের সর্বপ্রথম বিশ্ববিদ্যালয় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সহ শেখ হাসিনা সেনানিবাসসহ দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম পানি জাদুঘর পটুয়াখালী জেলায় অবস্থিত।

পটুয়াখালী জেলার সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল:-
পটুয়াখালী জেলায় সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিদ্যমান। এই অঞ্চলে লোকগীতি বিশেষ করে জারী ও ভাটিয়ালীর জন্য বিখ্যাত। এই জেলায় নিম্নলিখিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিদ্যামান। পটুয়াখালী সদর উপজেলায় ৩১টি সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে। যেমন পটুয়াখালী থিয়েটার, সবুজ সংঘ, শহীদ স্মৃতি পাঠাগার, পটুয়া সাহিত্য পরিষদ, সুন্দরম, লিখন সাহিত্য পরিষদ, বিকিরণ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গন, প্রতিভা শিল্পী গোষ্ঠী, লেখক সমন্বয় পরিষদ, মুক্তপ্রাঙ্গণ, লেখক আড্ডা, কলকাকলী, লোকসংগীত একাডেমী ইত্যাদি।

এছাড়া জাতীয় কয়েকটি সাংস্কৃতিক ও সাহিত্য সংগঠনের শাখা পটুয়াখালীতে বিদ্যমান। যেমন খেলাঘর, উদিচী শিল্পীগোষ্ঠী, রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ, নজরুল চর্চা কেন্দ্র, জাতীয় কবিতা পরিষদ, ইত্যাদি। কলাপাড়া উপজেলায় ০৫ টি এবং দশমিনা উপজেলায় ০৭ টি সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে।
০৬ আগস্ট ২০১১ থেকে পটুয়াখালীর শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা, লালন পালন ও বিকাশে ‘দখিনের কবিয়াল’ সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। শিল্পকলা একাডেমী হচ্ছে এ জেলার সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের প্রাণকেন্দ্র। সংগীত, নাচ এবং চিত্র কর্মের ব্যাপক চর্চা ও প্রচলন রয়েছে। পটুয়াখালী বসবাসকারী করে বেশ কিছু উপজাতীয় নৃগোষ্ঠী যার মধ্যে মগ ও চাকমা উল্লেখযোগ্য। এছাড়া রয়েছে কলাপাড়া উপজেলার রাখাইন পল্লী। এরা বিভিন্ন ধরনের পোশাক যেমন, তাতের কাপড়, কামিচ, শাড়ী, লুঙ্গী, গামছা ইত্যাদি তৈরি করে থাকে।

