পটুয়াখালী জেলা শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেই সমৃদ্ধ নয়, বরং এই জেলা জন্ম দিয়েছে বহু রাষ্ট্রনায়ক, মন্ত্রী, প্রশাসক ও জাতীয় পর্যায়ের নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিত্বকে। তারা বাংলাদেশের রাজনীতি, প্রশাসন ও রাষ্ট্র পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

পটুয়াখালী জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ
রাজনীতিবিদ ও মন্ত্রীবর্গ
আব্দুল বাতেন তালুকদার
প্রাক্তন মন্ত্রী। পটুয়াখালী জেলার রাজনীতিতে তিনি ছিলেন প্রভাবশালী ও অভিজ্ঞ নেতা। দীর্ঘদিন জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
মাহবুবুর রহমান তালুকদার
প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী। সরকারে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি এলাকাভিত্তিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখেন।
আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন
সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, সাবেক বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী, ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা একজন জাতীয় পর্যায়ের নেতা। যুবসমাজ ও সংগঠনে তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
শাহজাহান মিয়া
বর্তমান সংসদ সদস্য, সাবেক ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি ধর্মীয় ও সামাজিক বিষয়ে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
আ. স. ম. ফিরোজ
সাবেক চিফ হুইপ, জাতীয় সংসদ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, জাতীয় সংসদে শৃঙ্খলা ও আইন প্রণয়নে তার ভূমিকা প্রশংসিত।
এস এম শাহাজাদা
সংসদ সদস্য, পটুয়াখালী–৩, বর্তমান সময়ের একজন সক্রিয় জনপ্রতিনিধি।
মহিব্বুর রহমান (মহিব)
সংসদ সদস্য, পটুয়াখালী–৪, এলাকার উন্নয়ন ও জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন।
গোলাম মাওলা রনি
সাবেক সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, লেখক ও সমালোচক, বাংলাদেশের রাজনীতিতে একজন ব্যতিক্রমী চিন্তাবিদ ও তীক্ষ্ণ ভাষার বিশ্লেষক হিসেবে পরিচিত।
প্রশাসন ও রাষ্ট্র পরিচালনায় অবদান
মোহাম্মদ কেরামত আলী
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সাবেক মন্ত্রী, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পদে দায়িত্ব পালনকারী এই ব্যক্তি প্রশাসনিক দক্ষতার জন্য পরিচিত।
ফয়েজ আহম্মদ
সদস্য, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (PSC), সাবেক সিনিয়র সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, দেশের প্রশাসনিক কাঠামো গঠনে তার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আব্দুল মালেক
সাবেক তথ্যসচিব, তথ্য মন্ত্রণালয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে গণমাধ্যম ও তথ্য ব্যবস্থাপনায় ভূমিকা রেখেছেন।
কেএম নুরুল হুদা
প্রাক্তন প্রধান নির্বাচন কমিশনার, বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় নির্বাচনী ব্যবস্থার সর্বোচ্চ দায়িত্বে থেকে নির্বাচন পরিচালনা করেছেন।
সামরিক ও মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব
আলতাফ হোসেন চৌধুরী
প্রাক্তন বিমান বাহিনী প্রধান, প্রাক্তন মন্ত্রী, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম বি. ডি. হাবিব উল্লাহ
১৯৭১ সালের ভারতীয় ট্রেনিংপ্রাপ্ত যুদ্ধকালীন কমান্ডার, তৎকালীন ছাত্র ইউনিয়নের নেতা, পটুয়াখালী সরকারি কলেজ, মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি নেতৃত্বদানকারী এক সাহসী সংগঠক।
পটুয়াখালী জেলা শুধু রাজনীতি ও প্রশাসনেই নয়, বাংলাদেশের সংস্কৃতি, নাটক, চলচ্চিত্র ও সংগীত জগতেও উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। এই জেলা থেকে উঠে আসা শিল্পীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন।
চলচ্চিত্র ও অভিনয় জগত
তানিয়া আহমেদ
অভিনেত্রী ও চলচ্চিত্র পরিচালক, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ও নাট্যাঙ্গনের পরিচিত মুখ। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি চলচ্চিত্র পরিচালনার মাধ্যমেও নিজের সৃজনশীলতার প্রমাণ দিয়েছেন।
ওয়াসিমুল বারী রাজীব
চলচ্চিত্র অভিনেতা, বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে অ্যাকশন ও চরিত্রাভিনয়ে পরিচিত নাম। তার অভিনীত চলচ্চিত্রগুলো দর্শকমহলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
বিজরী বরকতউল্লাহ
অভিনেত্রী, নাটক ও টেলিভিশনভিত্তিক অভিনয়ে অত্যন্ত জনপ্রিয়। সাবলীল অভিনয়ের জন্য তিনি দর্শকদের কাছে সুপরিচিত।
অহনা রহমান লাকি
অভিনেত্রী, সমসাময়িক নাট্যজগতের একজন প্রতিভাবান মুখ। নাটক ও টেলিফিল্মে নিয়মিত অভিনয়ের মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করেছেন।
সংগীত ও সাংস্কৃতিক অঙ্গন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা
সংগীত শিল্পী (রবীন্দ্রসংগীত), বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী। দেশে ও বিদেশে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে তিনি বাংলা সংস্কৃতিকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরেছেন।
সংস্কৃতিতে পটুয়াখালীর অবদান
পটুয়াখালী জেলার গ্রামীণ জনপদে দীর্ঘদিন ধরে
- পালা গান,
- জারি–সারি,
- ভাটিয়ালি,
- লাঠি খেলা ও লোকনাট্য
চর্চিত হয়ে আসছে। এই সাংস্কৃতিক ধারাই তৈরি করেছে বহু শিল্পীর ভিত্তি, যারা পরবর্তীতে জাতীয় পর্যায়ে উঠে এসেছেন।
খেলাধুলা অঙ্গন
সোহাগ গাজী
জাতীয় ক্রিকেটার, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক খেলোয়াড়। অফ-স্পিন অলরাউন্ডার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। পটুয়াখালীর ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে পরিচিত মুখ।
কামরুল ইসলাম রাব্বি
ক্রিকেটার, দেশীয় ক্রিকেটে পরিচিত নাম। পটুয়াখালী জেলার ক্রিকেট উন্নয়নে তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
শিক্ষা, প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব
কেএম নুরুল হুদা
প্রাক্তন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী একজন ব্যক্তিত্ব। স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণের পাশাপাশি রাষ্ট্র পরিচালনায় দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখেছেন।
ফয়েজ আহম্মদ
সদস্য, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি), সাবেক সিনিয়র সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রশাসনিক দক্ষতা ও সুশাসনে অবদানের জন্য সুপরিচিত।
আব্দুল মালেক
সাবেক তথ্যসচিব, বাংলাদেশ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে দায়িত্ব পালন করে তথ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনে ভূমিকা রেখেছেন।
বুদ্ধিবৃত্তিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষণ
গোলাম মাওলা রনি
সাবেক সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক, রাজনৈতিক প্রবন্ধ, কলাম ও টেলিভিশন আলোচনায় সুপরিচিত। সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে তার বিশ্লেষণ ব্যাপক আলোচিত।
মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয় ইতিহাসে অবদান
বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম বি. ডি. হাবিব উল্লাহ
১৯৭১ সালের ভারতীয় ট্রেনিংপ্রাপ্ত যুদ্ধকালীন কমান্ডার, তৎকালীন ছাত্র ইউনিয়নের নেতা, পটুয়াখালী সরকারি কলেজ, মুক্তিযুদ্ধে তার সাহসী ভূমিকা পটুয়াখালীর ইতিহাসে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়।