দরিদ্রদের কাজের তালিকায় ইউপি সদস্য স্ত্রী ভাইয়ের নাম ,পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থানের (ইজিপিপি) আওতাধীন ৪০ দিনের কর্মসূচিতে রাস্তার কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শ্রমিকের তালিকায় নিজের ও স্বজনদের নাম দেওয়া এবং খননযন্ত্র দিয়ে কাজ করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিন ইউপি সদস্য।এ নিয়ে ৩০ এপ্রিল তাদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন সুবিধাভোগীর তালিকায় থাকা বঞ্চিতরা।অভিযুক্তরা হলেন- পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ধুলাস্বার ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রফিকুর ইসলাম, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সিদ্দিক হওলাদার এবং ৭, ৮ ও ৯ ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য মোসা. কুলসুম আক্তার।
দরিদ্রদের কাজের তালিকায় ইউপি সদস্য স্ত্রী ভাইয়ের নাম
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ধুলাস্বার ইউনিয়নের চর-গঙ্গামতির বাদলের বাড়ি থেকে ফরেস্ট অফিস হয়ে পাকা রাস্তার মাথা পর্যন্ত এবং কাউয়ারচর বটতলা থেকে সাগরপাড় পর্যন্ত রাস্তা মেরামত বাবদ এ প্রকল্পের আওতায় দরিদ্রদের দিয়ে কাজ করানোর কথা। যার বরাদ্দ হয় ২০ লাখ টাকা।কিন্তু শ্রমিকের তালিকায় নিজের নাম দিয়েছেন প্রকল্পের সভাপতি ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. সিদ্দিক হাওলাদার। তার স্ত্রী মোসা. মরিয়ম বেগম ও ছোট ভাই মো. কবির হাওলাদারের নাম তালিকায় দেওয়া হয়। তবে বেশকিছু দিনমজুরের নাম তালিকায় থাকলেও তারা জানেই না ওই কাজ তাদের করার কথা কিংবা তালিকায় তাদের নাম আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাস্তা দুটি চার-পাঁচ মাস আগে অভিযুক্ত ইউপি সদস্যরা খননযন্ত্র দিয়ে রাস্তার পাশ থেকে বালু তুলে মেরামত করেছে। তবে এটা যে নতুন কর্মসংস্থান যোগাতো সাধারণ মানুষের প্রাপ্য সেই খবর কেউ জানতেন না। কিন্তু তালিকা হাতে পাওয়ার পর সুষ্ঠু বিচার চেয়েছেন ভুক্তভোগীরা।সুবিধাভোগীর তালিকায় ৫১ নম্বরে থাকা পাপিয়া বলেন, ‘ছয়-সাত মাস আগে নারী মেম্বার একজন সিম বিক্রেতাকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়ি আসেন। আমার হাতের টিপসই নিয়ে যান আর
বলেন- সিমে কৃষি নামে টাকা আসবে, পরে সিম দিয়ে যাওয়া হবে। এরপর আর কোনো খোঁজ নেই। এখন শুনি সেই নামে আমরা নাকি দৈনিক ৪০০ টাকা বেতনে কাজ করেছি। এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না।’৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা কৃষক আলমগীর বলেন, ‘আমাদের জাতীয় পরিচয়পত্র মেম্বাররা চাইলে দিয়ে দেই। কিন্তু আমাদের তো কিছু বলে না। এখন শুনি আমরা রাস্তায় কাজ করে একেকজন ১৬ হাজার টাকা করে পেয়েছি। অথচ আমরা এর কিছু জানি না, সঠিক তদন্ত করে এর বিচার চাই।’
সুবিধাভোগীর তালিকায় থাকা সুজন নামের এক কৃষক বলেন, ‘এ রাস্তা গত কয়েকমাস আগে ভেকু দিয়ে করানো হয়েছে। এটা এলাকার সবাই দেখেছে অথছ এখন দেখি এখানে নাকি আমি কাজ করেছি। সেই লিস্টে ৫৫ নম্বরে আমার নাম। শুধু আমি না এলাকার অনেক অসহায় মানুষের নাম দিয়ে টাকা তুলে নিয়েছে ওয়ার্ডের মেম্বাররা। আমরা ডিসির কাছে অভিযোগ দিয়েছি। সাধারণ গরিব মানুষকে ঠকানো হয়েছে এর সঠিক বিচার চাই।’
